শবে কদরের দোয়া ও ফজিলত: ২৭তম রাতের বিশেষ আমল ও করণীয়
শবে কদর (লাইলাতুল কদর) ইসলামের এক মহিমান্বিত রাত, যা হাজার মাসের চেয়েও উত্তম। এটি রমজান মাসের শেষ দশ রাতের বেজোড় রাতগুলোর মধ্যে একটি, বিশেষত ২১, ২৩, ২৫, ২৭ ও ২৯তম রাতে খোঁজ করতে বলা হয়েছে। তবে অনেক আলেমের মতে, ২৭তম রাতেই শবে কদর হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।
![]() |
শবে কদরের দোয়া ও ফজিলত |
এই পোস্টে আমরা জানবো—
✅শবে কদরের ফজিলত ও গুরুত্ব
✅বিশেষ দোয়া ও আমল
✅নামাজ ও ইবাদতের পদ্ধতি
✅এই রাত কীভাবে কাটাবেন
✅বিশেষ দোয়া ও আমল
✅নামাজ ও ইবাদতের পদ্ধতি
✅এই রাত কীভাবে কাটাবেন
শবে কদরের ফজিলত ও গুরুত্ব
শবে কদরের ফজিলত কুরআন ও হাদিসে সুস্পষ্টভাবে বর্ণিত হয়েছে।
শবে কদরের ফজিলত কুরআন ও হাদিসে সুস্পষ্টভাবে বর্ণিত হয়েছে।
১. কুরআনে শবে কদরের মর্যাদা
সূরা কদর: "নিশ্চয়ই আমি একে কদর রাতে অবতীর্ণ করেছি। আপনি কি জানেন কদর রাত কী? কদর রাত হলো হাজার মাস অপেক্ষা উত্তম।" (সূরা আল-কদর: ১-৩)
এই আয়াত অনুযায়ী, শবে কদরের এক রাতের ইবাদত ৮৩ বছর ৪ মাস ইবাদতের সমান সওয়াবের সমতুল্য।
২. হাদিসে শবে কদরের গুরুত্ব
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন: "যে ব্যক্তি ঈমান ও সওয়াবের আশায় কদরের রাতে নামাজ পড়ে, তার আগের সমস্ত গুনাহ মাফ করে দেওয়া হয়।" (সহিহ বুখারি, হাদিস: ১৯০১)
শবে কদরের দোয়া
শবে কদরের জন্য বিশেষ দোয়া শেখানো হয়েছে, যা পড়ে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাওয়া উত্তম।
উম্মুল মুমিনীন আয়েশা (রা.) বলেন: আমি রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে জিজ্ঞাসা করলাম,
"হে আল্লাহর রাসুল! আমি যদি শবে কদর পাই, তাহলে কোন দোয়া পড়বো?"
নবী (সা.) বললেন: اللهم إنك عفو تحب العفو فاعف عني
উচ্চারণ: "আল্লাহুম্মা ইন্নাকা আফুউন তুহিব্বুল আফওয়া ফা'ফু আন্নি।"
অর্থ: "হে আল্লাহ! তুমি অত্যন্ত ক্ষমাশীল, ক্ষমা করতে ভালোবাসো, আমাকে ক্ষমা করে দাও।" (তিরমিজি, হাদিস: ৩৫১৩)
২৭তম রাতের বিশেষ আমল
শবে কদরের রাতে যেসব আমল করলে আল্লাহর রহমত লাভ করা যায়—
১. নফল নামাজ পড়া
শবে কদরে নফল নামাজ পড়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
অন্তত ৪, ৬, ৮ বা ১২ রাকাত নফল নামাজ পড়া যেতে পারে।
দুই রাকাত করে পড়লে প্রতিটি রাকাতে সূরা ফাতিহার পর সূরা ইখলাস ৩ বার পড়লে ভালো হয়।
২. কুরআন তিলাওয়াত করা
এই রাতে কুরআন তিলাওয়াত করা অত্যন্ত সওয়াবের কাজ।
সূরা কদর, সূরা ইয়াসিন, সূরা রহমান, সূরা মুলক ও সূরা বাকারা তিলাওয়াত করা ভালো।
৩. দোয়া ও ইস্তিগফার
বেশি বেশি "আস্তাগফিরুল্লাহ" পড়ুন।
নিজের ও মুসলিম উম্মাহর জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করুন।
৪. দরুদ শরিফ পাঠ করা
১০০ বা ১০০০ বার দরুদ পাঠ করলে আল্লাহর রহমত লাভ করা যায়।
৫. দান-সদকা করা
শবে কদরের রাতে গরিবদের সাহায্য করলে ৮৩ বছরের দানের সমান সওয়াব পাওয়া যাবে।
শবে কদরের রাত কীভাবে কাটাবেন?এই রাতে ইবাদতে মনোযোগী হতে হলে কিছু বিষয় অনুসরণ করা উচিত—
1. সন্ধ্যার পর থেকেই ইবাদতে মনোযোগ দিন।
2. মাগরিব ও এশার নামাজ জামাতে আদায় করুন।
3. পরিবারের সবাইকে নিয়ে ইবাদত করুন।
4. অহেতুক সময় নষ্ট না করে জিকির ও দোয়া করুন।
5. রাতে ঘুমানোর আগে দুই রাকাত সালাতুত তওবা পড়ে নিন।
শেষ কথা: শবে কদর আল্লাহর এক বিশেষ রহমতের রাত। এটি পাওয়া মানে জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ রাত পাওয়া। তাই আমাদের উচিত, এই রাতের প্রতিটি মুহূর্ত ইবাদতে ব্যয় করা, ক্ষমা প্রার্থনা করা এবং আল্লাহর নৈকট্য লাভের চেষ্টা করা।
আল্লাহ আমাদের সবাইকে শবে কদরের বরকত অর্জন করার তাওফিক দিন। আমিন!
আরো জনপ্রিয় পোস্টঃ
👉 ৯৯+ রমজান নিয়ে উক্তি: রমজান নিয়ে স্ট্যাটাস ২০২৫ -সুন্দর ইসলামিক ক্যাপশন, শুভেচ্ছাবার্তা ও প্রেরণামূলক স্ট্যাটাস পেতে আমাদের ব্লগটি পড়ুন।
আপনার মতামত দিন!
এই পোস্টটি কেমন লাগলো? শবে কদর সম্পর্কে আপনার ভাবনা কী? কমেন্টে জানান এবং শেয়ার করুন যাতে অন্যরাও উপকৃত হয়!
Comments